empty
 
 
11.12.2025 07:34 AM
১১ ডিসেম্বর কীভাবে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করবেন? নতুন ট্রেডারদের জন্য ট্রেডিংয়ের সহজ পরামর্শ ও বিশ্লেষণ

বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:

EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

This image is no longer relevant

বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঠিক সেইরকম মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, যেমনটি অধিকাংশ ট্রেডার প্রত্যাশা করেছিল। এটি উল্লেখযোগ্য যে, মার্কেটের ট্রেডাররা সব সময় ফেডের বৈঠকের ফলাফলের প্রতি খুব স্পষ্ট বা যৌক্তিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় না। গতকাল এমনই এক পরিস্থিতির উদাহরণ দেখা গেছে—গত কয়েক মাসে ফেডারেল রিজার্ভ যখনই মুদ্রানীতি নমনীয় করেছে, ডলারের দর তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এইবার ঠিক উল্টো পরিস্থিতি দেখা গেল—যদিও ফেড ২০২৬ সালের আগে সুদের হার আর না কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবুও ডলারের দরপতন হয়েছে। সামগ্রিকভাবে, প্রত্যাশিত অনুযায়ী সুদের হার টানা তৃতীয়বারের মতো কমানো হয়েছে, কিন্তু কিছুটা আগেভাগেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত শ্রমবাজার, বেকারত্ব বা মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত তেমন কোনো নতুন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি, তাই ফেড খুব একটা সুনির্দিষ্ট এবং বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে, তারা ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির শঙ্কায় আগেইভাগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেহেতু এই সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে "ডোভিশ বা নমনীয়", তাই মার্কিন ডলারের দরপতন যৌক্তিক ছিল। আমরা গত দুই সপ্তাহ ধরে শুধুমাত্র দৈনিক টাইমফ্রেমে 1.1400–1.1830-এর সাইডওয়েজ চ্যানেলের নিম্নসীমা থেকে টেকনিক্যাল রিভার্সালের উপর ভিত্তি করে এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়ে আসছিলাম।

EUR/USD 5M পেয়ারের চার্ট

This image is no longer relevant

গতকাল ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। যখন ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের সময় মূল্য 1.1655 লেভেল থেকে বাউন্স করে তখন প্রথম সিগন্যাল গঠিত হয়। এরপর এই পেয়ারের মূল্য ১৫ পিপস কমে যায়—ফলে কোনো লোকসান হয়নি, এমনকি ফেডের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে এই ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে সামান্য লাভ করাও সম্ভব ছিল। ফেডের ঘোষণার পর মার্কিন ডলার বিক্রি করার সুযোগ তৈরি হয় এবং একই সময়ে 1.1655–1.1666 এরিয়ায় একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। ফলে, নতুন ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন, যা থেকে এখন পর্যন্ত মুনাফা করা যেতে পারে।

বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:

ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে, যদিও এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন অতিক্রম করেছে। মার্কিন ডলারের জন্য সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও বেশ নেতিবাচক, তাই ইউরোর আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট থেকেও ইউরো সহায়তা পাচ্ছে, কারণ দৈনিক টাইমফ্রেমে সাইডওয়েজ রেঞ্জভিত্তিক মুভমেন্ট এখনো অব্যাহত আছে এবং এই রেঞ্জের নিম্নসীমা থেকে মূল্য বিপরীতমুখী হওয়ার পরে উপরের সীমার দিকে এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির আশা করা যায়।

বৃহস্পতিবার নতুন ট্রেডাররা আবারও 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে ট্রেডিং করতে পারে, কারণ টানা ছয় দিন ধরে এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ায় অবস্থান করছে। যদি এই এরিয়া থেকে মূল্য বাউন্স করে, তাহলে মূল্যের 1.1745–1.1754-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ রয়েছে। আর যদি মূল্য এই লেভেলের নিচে স্থিতিশীল হয়, তাহলে মূল্যের 1.1584–1.1591-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে।

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হল: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527–1.1531, 1.1550, 1.1584–1.1591, 1.1655–1.1666, 1.1745–1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970–1.1988। বৃহস্পতিবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই বা কোনো অর্থনৈতিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়নি। ফলে মার্কেটে আবারও স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করতে পারে, এবং আজকের ট্রেডিং কেবলমাত্র টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করবে।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

  1. সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
  2. ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
  3. ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
  4. ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
  5. MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
  6. নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
  7. স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।

চার্টে কী কী রয়েছে:

  • সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
  • লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
  • MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।

ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.